স্টাফ রিপোর্টার ॥ বরিশালে পৌঁছেছে করোনা ভাইরাসের টিকা। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে বরিশালের জনগণের মাঝে করোনা ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। গতকাল শুক্রবার বেলা ১২টার দিকে ঢাকা থেকে একটি ফ্রিজার ভ্যানে করে বরিশাল সিভিল সার্জন কার্যালয়ে পৌঁছায় করোনা প্রতিরোধক ভ্যাকসিন। প্রথম চালানে বরিশাল জেলার জন্য ১৪ কার্টন ভ্যাকসিন এসেছে বলে জানিয়েছেন বরিশালের সিভিল সার্জন ডা. মো. মনোয়ার হোসেন। পরে এগুলো বিভিন্ন উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরন করার কথা জানান তিনি। শুক্রবার বরিশাল বিভাগের ৬ জেলার মধ্যে ৫ জেলায় ভ্যাকসিন পৌঁছালেও পিরোজপুর জেলায় ভ্যাকসিন পৌঁছবে ৩১ জানুয়ারি। তবে সরকারি নির্দেশনা ছাড়া বিভাগীয় পর্যায়ে টিকা প্রদান শুরু করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক ডা. বাসুদেব কুমার দাস। তিনি জানান, ইতিমধ্যে বিভাগীয় পর্যায়ে করোনা ভ্যাকসিন সংরক্ষণ এবং প্রয়োগে তাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। নার্সদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। এবার জেলা-উপজেলা পর্যায়ে ভ্যাকসিনেটরদের প্রশিক্ষণ শুরু হবে। তিনি আরও বলেন, বরিশাল বিভাগে ভ্যাকসিনেটর ও স্বেচ্ছাসেবকসহ মোট ৮৮৮ জন করোনা ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রম করবেন। এর মধ্যে ১৩২ জন ভ্যাকসিনেটর এবং স্বেচ্ছাসেবেক থাকবেন ৭৫৬ জন। আগামী ৭ অথবা ৮ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে বরিশাল বিভাগে করোনা টিকা প্রদান কার্যক্রমের উদ্বোধন হবে। ১৫ ক্যাটারগরির মানুষকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা বন্টন করা হবে বলে তিনি জানান। এর মধ্যে সামরিক-বেসামরিক, সরকারি চাকুরীজীবী, স্বাস্থ্যকর্মী, জনপ্রতিনিধি, মুক্তিযোদ্ধা, উন্নয়ন সংস্থার কর্মী এবং সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের আগে ভ্যাকসিন প্রদান করা হবে। সে হিসেবে প্রথম পর্যায়ে বরিশাল জেলায় ১ লাখ ৬৮ হাজার জন, পটুয়াখালীতে ৪৮ হাজার জন, ঝালকাঠিতে ১২ হাজার জন, পিরোজপুরে ৩৬ হাজার জন, ভোলায় ৬০ হাজার জন এবং বরগুনায় ২৪ হাজার ব্যক্তি এই টিকা পাবেন। বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক কার্যালয় জানিয়েছে, ভ্যাকসিন প্রদানের প্রতিটি টিমে ২জন উচ্চ প্রশিক্ষিত ভ্যাকসিনেটর এবং ৪ জন স্বেচ্ছাসেবক দায়িত্ব পালন করবেন। শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪টি টিম, প্রতিটি জেলা হাসপাতালে ৮টি টিম, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২টি করে টিম করোনার টিকা প্রয়োগের দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া অতিরিক্ত হিসেবে সিভিল সার্জন কার্যালয়ে একটি টিম স্ট্যান্ড বাই রাখা হবে। সিটি করপোরেশন এলাকায় ১০টি টিম ভ্যাকসিন প্রয়োগের দায়িত্বে থাকবে। বিভাগে প্রথম দফায় ৩৩ কার্টনে ৩ লাখ ৯৬ হাজার ডোজ টিকা আসবে। প্রথম পর্যায়ে ২৯ কার্টন বা ৩ লাখ ৪৮ হাজার ডোজ টিকা ৬ জেলায় প্রয়োগে করা হবে। ২৯ কার্টন টিকার মধ্যে বরিশালে ১৪ কার্টন, ভোলায় ৫ কার্টন, পটুয়াখালীতে ৪ কার্টন, পিরোজপুরে ৩ কার্টন, বরগুনা জেলায় ২ কার্টন এবং ঝালকাঠিতে ১ কার্টন টিকা দেয়া হবে। করোনা সংক্রামণের ওপর ভিত্তি করে বন্টন প্রক্রিয়া হচ্ছে। বাকি ৪ কার্টন বা ৪৮ হাজার ডোজ টিকা জরুরী প্রয়োজনে সংরক্ষণ করা হবে।
Leave a Reply